সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর আমাদের সবারই প্রিয় একটি ফল।আমরা অনেকেই সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা।আমরা জানি ফল ভরা পেটে খেতে হয়।কিন্তু খেজুর এমন একটা ফল যা খালি পেটে খেলেও উপকার পাওয়া যায়।খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন।

সকালে-খালি-পেটে-খেজুর-খাওয়ার-উপকারিতা

 সম্পূর্ণ পোস্টে আমরা খেজুরের উপকারিতা এবং এর সম্পর্কে যত প্রশ্ন রয়েছে তার উত্তর এবং বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।আশা করি এতে আপনাদের আর জানার কিছু বাকি থাকবে না।নিজের শরীরকে সুস্থ সবল এবং প্রাণবন্ধক রাখতে খালি পেটে খেজুর খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। 

সূচিপত্রঃসকালো খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার নিয়ম এবং  উপকারিতা 

সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ধারনা এবং নিয়ম যেমন খেজুর এমন একটি ফল যা পুষ্টিগুণে ভরপুর আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ এছাড়া ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া এর সংক্রমণ থেকে রক্ষা। করে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও আমাদের নিজের শরীরের সৃষ্ট রোগ যেমনঃ বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া করা ,পেটের পিরা ,কষ্টকাঠিন্য , গ্যাসটিক ,মস্তিষ্কের বিকাশ ও সচল ওজন নিয়ন্ত্রণ , উচ্চ রক্তচাপ , আলসার, গর্ভবতী নারীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে খেজুর।

সকালে-খালি-পেটে-খেজুর-খাওয়ার-নিয়ম-এবং -উপকারিতা

নিজের শরীরকে সুস্থ সবল এবং প্রাণবন্ত রাখতে আমাদের সকলেরই উচিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা নিয়মিত। এত পুষ্টি উপাদান সম্পূর্ণ ফলটির সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিত এটার কি কি উপকারিতা এবং অপকারিতা রয়েছে এছাড়াও সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার নিয়ম এবং কয়টি খেতে হবে ইত্যাদি সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমি আশা করছি আপনারা সকলেই আমার এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে উপকৃত হবেন।

খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা তা আমাদের জন্য যে কত উপকার সেটা আপনাদের মাঝে সহজ ভাবে উপস্থাপনের জন্য আমি পয়েন্ট আকারে লিখেছি-

ওজন নিয়ন্ত্রণ ঃ বর্তমানে অনেকেই নিজের শরীরের ওজন নিয়ে চিন্তিত। ফাইবার ,স্টার্চ আমাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । সাইবার আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কাটাতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা কম রাখতে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে দূরে রাখে। খাবার কম খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে যে ঘাটতি দেখা দেয় তা খেজুরের সাহায্যে সহজেই মেটানো সম্ভব।

আরো পড়ুনঃকোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয়

মস্তিষ্ক ভালো রাখতেঃ আমাদের মস্তিষ্ককে সতেজ রাখতে যে সকল পুষ্টি উপাদান দরকার তা সবই খেজুরের মধ্যে আছে। সারাদিনের, ক্লান্তি দূর করতে , কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে , সারাদিনে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি এবং পুষ্টি উপাদান যোগান দিতে সকালবেলা খালি পেটে চার থেকে পাঁচটি খেজুর যথেষ্ট। বাচ্চাদের মেধাবিকাশের ক্ষেত্রে খেজুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতেঃ আমাদের শরীরে রক্তে সরবরোহে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সঠিক থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। রক্ত সরবরাহের ক্ষেত্রে আয়রন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আর খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। তাই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সকালে খালি পেটে নিয়মিত খেজুর খেলেই যথেষ্ট।

হার্টের সমস্যা দূর করতেঃ খেজুর আমাদের হার্টকে বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগ থেকে দূরে রাখতে সক্ষম। যাদের হার্ট দুর্বল এবং হার্টে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে তারা সকালে খালি পেটে নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিঃ বয়সের সাথে আমাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যেমন; ব্রণ , চোখের নিচে কালো দাগ  , মেস্তা , ক উস্ক ও রুক্ষ ত্বক ইত্যাদি। ভেতর থেকে ফর্সা ভাব সুন্দর এবং উজ্জ্বল চেহারা , ত্বক সবসময় টনটনে রাখা এবং সৌন্দর্য বের করে আনা সহ বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের ত্বকে সৃষ্ট সকল সমস্যা খুব সহজেই দূর করতে পারে। খালি পেটে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা সকল সমস্যার সমাধান পেতে পারি।

চুলের যত্নেঃ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ঘাটতির জন্য আমাদের অনেকেরই রুক্ষ , শুষ্ক , চুল ঝরে পড়া , নতুন চুল না গজানো , মাথায় খুশকি , চুল ছোট থাকা , চুল পাতলা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে। চুল মজবুত , ঘন ও উজ্জ্বল করে তোলার জন্য যে সকল পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন তা সবাই খেজুরের মধ্যে রয়েছে।

গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রেঃ একজন পুষ্টিগুণে সম্পন্ন মা-ই পারে একটি সুস্থ সবল সন্তান জন্ম দিতে। সবসময় পুষ্টি উপাদানে ভরপুর থাকা প্রয়োজন একজন গর্ভবতী নারীর। যেহেতু খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন , পটাশিয়াম , ক্যালসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন এ-সি-ডি, খনিজ লবণ ছাড়াও অনেক পুষ্টিগুণ-এ ে ভরপুর তাই খেজুর গর্ভবতী নারীদের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান খুব সহজেই যোগান দিতে পারে। একজন গর্ভবতী মহিলা দিনে তিনটি থেকে চারটি খেজুর নিয়মিত খেলেই তার পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি খুব সহজেই মেটানো সম্ভব।

এতক্ষণ আমরা জানলাম খেজুর কিভাবে নিজের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যোগান দিতে পারে। এখন আমরা জানবো খেজুর কিভাবে রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে- 

যাদের অনেক পুরনো খুশখুসে কাশি এখনো ঠিক হচ্ছে না তারা চাইলেই খালি পেটে খেজুর খেতে পারেন এর মাধ্যমে দুটো সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে আপনার খুশখুসে কাশি দূর হয়ে যাবে। খুসখুসে কাশি দূর করতে রাতে এক গ্লাস পানিতে সাত থেকে নয়টি খেজুর ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবেঃ আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে খেজুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে থাকা রোগ জীবাণু ও ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার সাথে যুদ্ধ করে। এর জন্য খেজুর কে ক্যান্সার প্রতিরোধ নামে ডাকা হয় কারণ এটি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।

গ্যাস্ট্রিক দূর করতেঃ আমাদের বদহজম, পচন ক্রিয়া, বুকে জালা পেটব্যথা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করে ফাইবার যা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে খেজুরের মধ্যে। এছাড়াও পেটের বিভিন্ন প্রকার রোগ প্রতিরোধ করতে পারি নিয়মিত সকালে খালি পেটে চার থেকে পাঁচটি খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে।

কর্মশক্তি বৃদ্ধিঃ আমাদের সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে , কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ, , সারাদিন চাঙ্গা , কর্মশক্তি বৃদ্ধি এবং প্রফুল্ল মন বজায় রাখতে আমাদের সকালের নাস্তা অত্যন্ত পুষ্টিগুণে ভরপুর হতে হবে। এজন্য আপনারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে বা নাস্তা হিসেবে চার থেকে পাঁচটি খেজুর খেতে পারেন যা আপনার মন ও শরীরের কর্মশক্তি বৃদ্ধি করবে।

হৃদরোগ প্রতিরোধকঃ আমাদের শরীরে হৃদরোগের জন্য একমাত্র দায়ী পটাশিয়াম। পটাশিয়ামের অভাবে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বারে। যেহেতু খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে তাই এটিই খাওয়ার মাধ্যমে আমরা হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং স্টকের ঝুঁকি কমাতে পারি।

কোলেস্টরেল কমাতেঃ আমাদের দেহে ক্ষতিকর পদার্থ এবং কোলেস্টরেল থাকে যা আমাদের রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে ।কিন্তু খেজুরে থাকা পুষ্টি উপাদান এই কোলেস্টরেল এবং ক্ষতিকার পদার্থ বের করে দেয়। নিয়মিত খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় ফলে শরীর সুস্থ সবল থাকে।

খালি পেটে খেজুর খাওয়ার নিয়মাবলী 

সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেক কিছুই জানলাম । যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং আপনি এ সম্পর্কে সকল তথ্য জানলে অনেক উপকৃত হবেন। খেজুরের পুষ্টি উপাদান ও গুণগতমান সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকা সত্ত্বেও খাওয়ার সঠিক নিয়ম না জানলে উপরোক্ত তথ্য আমাদের কোন কাজে আসবে না। তাই কখন কিভাবে খেজুর খেলে আমরা খেজুরের সম্পূর্ণ পুষ্টি উপাদান এবং গুণগতমান পাবেন সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো;

  • সকালে খালি পেটে তিন থেকে পাঁচটি খেজুর খেতে পারেন।
  • আপনার সকালে ও দুপুরের মাঝামাঝি সময়  ক্ষুধার ভাব হলে আপনি খেজুর খেতে পারেন
  • সন্ধ্যার আগে নাস্তা হিসেবে চার থেকে পাঁচটি খেজুর খেতে পারেন
  • রাত্রে ঘুমানোর আগে পাঁচ থেকে আটটি খেজুর খেতে পারে
  • পাঁচ থেকে সাতটি খেজুর একটি গ্লাসে রাতে ভিজিয়ে রাখুন
  • রাতে ভেজানো ৫ থেকে ৭ টি খেজুর সকালে খালি পেটে মধুর সাথে খেতে পারেন
  • পাঁচ থেকে সাতটি খেজুর ভেজানো ওই গ্লাসের মধ্যে সাত থেকে নয়টি কিসমিস মিশিয়ে সকালে খালি পেটে এগুলোর পানি খেতে পারেন
  • দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন
  • আপনি চাইলে বাদাম কিসমিস ও মধু একসাথে ভালো করে মিশিয়ে তার মধ্যে খেজুর দিয়ে খেতে পারেন

আরো পড়ুনঃছেলেদের মুখে ব্রণ কমানোর উপায়

সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার অপকারিতা

এতক্ষণ আমরা পুষ্টি গুণে ভরপুর সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়মাবলী সম্পর্কে জানলাম যে খেজুর কখন কিভাবে খেলে এর গুনাগুন এর সঠিক মাত্রা পাব। স্বাভাবিকভাবে আপনি ভাবতে পারেন খালি পেটে খেজুর খেলে এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা আছে কিনা?
আপনি ইতিমধ্যেই খেজুর এর উপকারিতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত নিম্নে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা বর্ণনা করা হলো;
  • খেজুর এমন একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খেলে হঠাৎ করে ডায়াবেটিকস বৃদ্ধি পেতে পারে। নিজের এই ডায়াবেটিক্স সমস্যা এড়ানোর জন্য বিশেষজ্ঞ ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
  • অনেকেরই শরীরে অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। যেহেতু খেজুরে অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে তাই আপনারা অবশ্যই খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
  • ভাইবার আমাদের হজম প্রক্রিয়া চলমান রাখে যেহেতু খেজুরে অতিরিক্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে তাই খালি পেটে অতিরিক্ত খেজুর খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রিক, পেটব্যথা ও ডায়রিয়া ইত্যাদি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আমাদের দৈহিক ওজন বৃদ্ধির সাথে মিষ্টির একটা অন্যরকম সম্পর্ক রয়েছে। যাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তারা খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন অথবা কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন কারণ খেজুর মিষ্টি জাতীয় ফল।

দিনে কি পরিমান খেজুর খাওয়া উচিত


খেজুর সম্পর্কে উপরোক্ত সকল আলোচনাতে আপনাদের জন্য সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা , অপকারিতা এবং খাওয়ার সঠিক নিয়মাবলী সম্পর্কে অবগত হয়েছি। কিন্তু কি পরিমান বা কয়টা খেজুর খেলে দেহের জন্য উপকার এ সম্পর্কে নিম্নে  বিস্তারিত আলোচনা করা হলো;

  • খেজুরের পুষ্টি উপাদান পরিমাপের মাধ্যমে জানা যায় যে প্রোটিন ২.৪ থেকে ৫.৮ , ফাইবার 6. 4 থেকে ১১. ৮ শতকরা এবং খেজুরের অন্যতম একটি উপাদান কার্বন ৪৫ % পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষ প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম বা ৪ থেকে ৫টি খেজুর খুব সহজে খেতে পারবেন।
  • ডায়াবেটিসের রোগী এবং যাদের স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন বেশি তারা দিনে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনটি খেজুর খেতে পারেন। এছাড়া ডায়াবেটিসের রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষঅজ্ঞ ডক্টর এর পরামর্শ অতীব জরুরী।
  • যাদের স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন কম তারা সাত থেকে নয়টি খেজুর খেতে পারেন।
  • খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, মিনারে্‌ আয়রন ও স্নেহ জাতীয় পদার্থ থাকে। যাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ বিষয় হলে যে এই ছোট ছোট লেখা ভাল্লাগেনা পটাশিয়াম রয়েছে তারা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে দুই থেকে তিনটি খেজুর নিয়মিত খেতে পারেন। অপরদিকে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি চার থেকে পাঁচটি খেজুর খেতে পারেন কেননা আইরন , স্নেহ জাতীয় পদার্থ হৃদপিণ্ড কে সুস্থ এবং সবল রাখে।
  • অনেকের অতিরিক্ত গ্যাসের কারণে বুক জ্বালাপোড়া করে এবং হজম ক্রিয়ায় সমস্যা হয় তারা নিয়ম করে প্রতিদিন সর্বোচ্চ তিনটি খেজুর খেতে পারেন।

খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বাড়ে না কমে?


উপরোক্ত সকল আলোচনার থেকে আপনারা সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পেলেও একটা বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায় সেটা হচ্ছে খেজুর খেলে ওজন বেড়ে যায় না কমে যায়? চলুন নিম্নোক্ত আলোচনা সাহায্য জেনে নেই অস্পষ্ট থাকা প্রশ্নের ব্যাপারে আশা করি আপনি সঠিক তথ্য পাবেন এবং উপকৃত হবেন।

ওজন কমাতেঃ আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ কোলেস্টরেল এবং ক্ষতিকর পদার্থ কমাতে খেজুরে থাকা পুষ্টি উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফাইবার আমাদের দেহে ক্ষুধা লাগা এবং খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে এই ফাইবার খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। খাবার কম খাওয়ার ফলে যে সকল পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হয় তা খেজুর একাই মিটিয়ে দেয় যার ফলে খুব সহজ ভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।


ওজন বাড়াতেঃ অতিরিক্ত সব কিছুরই বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। খেজুরের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই ঘটে। খেজুর মূলত শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খেলে ঠিক এর উল্টোটা ঘটে তখন আমাদের শরীরের ওজন আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। খেজুর যেহেতু মিষ্টি জাতীয় ফল তাই নিয়মিত খেজুর খাবেন কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে কখনোই খাবেন না।

  • অনেকেই শরীরের ওজন বাড়াতে চায়। ওজন বাড়াতে শুধু খেজুর খেয়েও নিজের ওজন খুব দ্রুততার সাথে বাড়ানো যায়। বিভিন্ন পায়ে খেজুর খাওয়া যেতে পারে যেমন দুধ ও খেজুর ছয় থেকে আটটি খেজুর একসাথে মিশিয়ে নিয়মিত খাবেন।
  • আপনারা খেজুরের সাথে আরও ভালো ফলাফল পেতে কিসমিস খেতে পারে। রাতে সাত থেকে নয়টি খেজুরের সাথে আপনি সর্বোচ্চ আটটি কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে না খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন এতে আপনার শরীরের ওজন দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পাবে
  • দ্রুত শরীরের ওজন বৃদ্ধির জন্য হাফ কাপ মধু বিভিন্ন প্রকারের বাদাম যেমন কাঠবাদাম কাজু ইত্যাদি এক কাপ পরিমাণে ঘি ভালো করে মিশিয়ে রাতে এবং সকালে খালি পেটে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
আমরা ইতিমধ্যেই খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা নিয়ম এবং কিভাবে খেলে ওজন বাড়বে এবং কি নিয়মে খেলে ওজন কমবে সকল বিষয়ে সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য জেনেছি খেজুরের গুণগতমান এতটাই ভালো যে এটি সঠিক নিয়মে খেলে ওজন বাড়বে এবং কেউ যদি ওজন কমাতে চায় তাহলে সঠিক নিয়মে খেলে তার ওজন কমে যাবে।

খেজুরের সাথে দুধ খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা


সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ক্ষেত্রে খেজুরে দুটি পদার্থই গুণে মানে ভরপুর এদের কোনটাই কোনটার থেকে পুষ্টি উপাদান কম নয় এখন আমরা দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে নেমে বিস্তারিত জানবো;

ভিটামিনঃ খেজুর এবং দুধকে বলা হয় ভিটামিনের আধার। এদের অনেক ভিটামিন রয়েছে যেমন ভিটামিন এ-বি ২-বি পাঁচ-বি তিন-বি এক ও a2 । ভিটামিন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা এই দুটি খাবার থেকে খুব সহজেই আমরা পেতে পারি। ভিটামিনের অধিকাংশ দুধ ও খেজুরের মধ্যে বিদ্যমান।

আয়রনঃ মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গানু হৃৎপিণ্ডে সুস্থতার জন্য আয়রন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে হৃদপিণ্ডকে দুর্বল হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। খেজুর ও দুধের সংমিশ্রণে সহজেই আমরা বেশি পরিমাণে আয়রন প্রোটিন পেয়ে থাকে।


প্রোটিনঃ আপনাদের শরীরের মধ্যে প্রোটিনের অভাব দেখা দিলে কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন আমরা সকলেই জানি। প্রোটিন সমিত খাদ্য বলা হয় দুধ এবং খেজুরকে। মানবদেহে অসুস্থ সরল রাখতে তুমি দেহে প্রোটিনে খুবই প্রয়োজনী।

ক্যালসিয়ামঃ ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের মানবদেহে এবং সুস্থ থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। যার অভাবের ফলে শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন হাড় ক্ষয়, বেশি দুর্ব্‌ মারি দুর্বল ইত্যাদি এবং আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে পারেন। সকল সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য নিয়মিত ভাবে খেজুর ও দুধ খাবেন।

বিভিন্ন প্রকারের সংক্রমণঃ আমাদের শরীরে প্রোটিনের অভাবে বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারেন যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ জনিত রোগ রয়েছে যেগুলো হলো গলা, ব্যাথ্‌ সর্দি, কাশি , জ্বর এই রোগ গুলো আমাদের শরীরে খুব সহজে আক্রমণ করতে পারে। এই ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে যেমন ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস থেকে নিজেকে প্রতিরোধ করতে নিয়মিত খেজুর ও দুধ খাওয়ার অভ্যাস করে তুলুন।

রক্তচাপঃ খেজুর এবং দুধের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আয়রন পটাশিয়াম ও সোডিয়াম যার দেহের অতিরিক্ত রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া আমাদের শরীরের মধ্যে থাকা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে্ন। তাই প্রতিদিন খেজুর ও দুধ মিশ্রণ করে একসঙ্গে খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের মধ্যে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ফেলুন।

হাড় মজবুতঃ দুধ ও খেজুরের মধ্যে রয়েছে অধিক পরিমানে ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম আয়রন। যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড়কে শক্তিশালী এবং মজবুত রাখতে সাহায্য করেন। বর্তমান সময়ে মহিলাদের মধ্যে বিশেষ করে হাটু, মাজা, গিয়া গিরায় ব্যথা ইত্যাদি সমস্যার রোগ হয়ে থাকে এজন্য মেয়েদের প্রতিদিন নিয়ম করে রাতে বা সকালে এক গ্লাস দুধের সাথে দুই থেকে তিনটি খেজুর মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করে তুলুন।

ঘুম ভালো হওয়াঃ শরীর ভালো রাখতে রাতে ঘুমের প্রয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাতে ঘুমানোর আগে দুধ ও খেজুর খান তাহলে রাতের ঘুম আপনার ভালো হবে। রাতে ঘুমানোর অভাবে যারা বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তারা নিয়মিত খেজুর ও দুধ একসঙ্গে মিশ্রণ করে প্রতিদিন এবং নিয়মিত খাবেন। কারণ দুধ ও খেজুরের মধ্যে রয়েছে অধিক পরিমাণে বায়োঅ্যাক্টিভ প্রোপার্টিজ যা আমাদের শরীরে ক্লান্তি দূর করে রাতে ঘুমোতে সাহায্য করে থাকে।

শরীরের ওজন কমাতে কোন খেজুর খাওয়া ভালো


আমাদের দেশের বিভিন্ন ধরনের খেজুর পাওয়া গিয়ে থাকে কিন্তু আপনারা কেউ জানেন না যে কোন খেজুর সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা থাকার প্রভাবে শরীরের ওজন কমানো যায়। খেজুর হলো আল্লাহ তাআলার একটি নিয়ামত। আমাদের দেশে বা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে নানা রকমের খেজুর পাওয়া গিয়ে থাকে সকল খেজুরের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান। অধিকাংশ মানুষ সকালে খালি পেটে খেজুর খেয়ে থাকেন এবং এর উপকারিতা গ্রহণ করে থাকে।

শরীরের-ওজন-কমাতে-কোন-খেজুর-খাওয়া-ভালো

শরীর সুস্থ রাখার জন্য খেজুর আমাদের সুস্থ,সবল,প্রাণবন্ত ওজন কমাতে এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা রোগ জীবাণু সংক্রমণ থেকে প্রতিরোধ করেন। এছাড়া আল্লাহ তায়ালার পবিত্র করতে নেই রয়েছে কোন ব্যক্তি যদি সকালে খালি পেটে ৭ টি আজওয়া খেজুর খেয়ে থাকে তাহলে যদি বিষ পান করে সেটা পানি হয়ে যাবে। ওজন কমাতে নিম্নে কিছু খেজুরের নাম তালিকা করে দেওয়া হল আপনি আপনার শরীর থেকে দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন-

  • সাফাওয়ি
  • আমবাই
  • সুগাই
  • মরিয়ম
  • আজওয়া
  • আরজেরিয়া 
  • মেডজুল
  • মাবরুম
  • ডাব্বাস
  • নাগাল
  • খুরমা
  • জাহদি

উপসংহার

লেখকের মতে,সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়া অত্যন্ত উপকারী কিন্তু প্রত্যেক বেশি উপকার জিনিসেরই ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। খালি পেটে খেজুর খাওয়ার ভালো দিক রয়েছে খারাপ দিক রয়েছে। তাই নিজের অবস্থার ওপর পর্যালোচনা করে অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত।ইতো মধ্যে আমরা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।আশা করি বুঝতেই পারছেন আজকের আর্টিকেল সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।আমাদের আর্টিকেল পরে জদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অন্যদের মাঝে সেয়ার এবং আপনি ফলো করে রাখবেন।আমরা এই রকম স্বাস্থ্য মূলক আর্টিকেল নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা করে থাকি।














এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লুকাস৩৬৫ জুরে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url