নারিকেল গাছের রোগ ও প্রতিকার
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোন মশ্চারাইজার ভালো
আমাদের দেশের অর্থকারি ফসল নারিকেল।নারিকেল গাছ রোপন করার মাধ্যমে আমাদের দেশের কৃষক রা অনেক লাভবান হচ্ছে।তবে সময় এবং মাসের সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সূচিপত্রঃনারিকেল গাছের রোগ ও প্রতিকার করার করনীয়
- নারিকেল গাছের রোগ ও প্রতিকার করার উপায়
- পোকা মাকড় এবং রোগ থেকে প্রতিরোধ করার পদ্ধতি
- নারিকেল ঝরে পড়ার কারণ ও প্রতিকার
- নারিকেল গাছের শত্রু সাদা মাছি নিয়ন্ত্রণ
- নারিকেল গাছের বিভিন্ন রোগের লক্ষণ
- নারিকেল গাছের বিভিন্ন রোগের প্রতিকার সম্পর্কে
- নারিকেল পাতায় ব্লাইট রোগ
- উপসংহার
নারিকেল গাছের রোগ ও প্রতিকার করার উপায়
গ্রাম অঞ্চলে নারিকেল গাছ ভালো জন্মে।সেখান থেকে অধিক টাকা আয় করা করা যায়।পরিচর্চা এবং শ্রম দেওয়ার মাধ্যমে নারিকেল গাছ থেকেই অধিক পরিমাণে উপার্জন করা সম্ভব।ভালো মানের বীজ,স্যার এবং বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে উন্নত মানের নারিকেল গাছ তৈরা করা সম্ভব।কিন্তু বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হতে পারেন।সময় মতো কীটনাশক ব্যবহার এবং পরিচর্চা না করার কারণে বিভিন্ন রোগ আক্রমণ করতে পারে।
আরো পড়ুন:শিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
স্থান নির্বাচনঃনারিকেল গাছ আর্দ্র এবং উষ্ণ মাটিতে ভালো জন্মে থাকে।নারিকেল গাছের জন্য সর্বোত্তম মাটি হলো বেলে মাটি।যেখানে পানি বেঁধে থাকে না এবং শুকিয়ে থাকে যার কারনে শিকড় পোচন রোগ ধরে না।
গাছ নির্বাচনঃভালো মানের নারিকেল গাছ তৈরি করার জন্য সুস্থ এবং ভালো চারা বেছে নিন।বীজগুলো ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করার জন্য পানিতে রেখে যাচাই করা উচিত।নষ্ট বীজ পানির উপরে ভেসে থাকেন এবং ভালো বীজ পানির মধ্যে ডুবে গিয়ে থাকেন।
দুরত্ব রাখুনঃএকটি গাছ থেকে অন্য একটি গাছের দুরত্ব কমপক্ষে ৭.৫ মিটার দুরে গাছ লাগানো উচিত।যাতে বড় হবার সাথে গাছটি তার নির্দিষ্ট জায়গা নিতে পারে।গাছ লাগানোর সর্বোত্তম সময় হলো বর্ষাকাল।কারন বর্ষাকালে মাটিতে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকে।
সেচ এবং স্যারঃগাছে পানি দেওয়ার জন্য উপযুক্ত সময় হলো গ্রীষ্মকাল।ভালো গাছ এবং ফল পাওয়ার সমন সঠিক সময়ে কীটনাশক ব্যবহার করা জরুরি।নারিকেল গাছ উৎপাদন করার জন্য নাইট্রোজেন,ফসফরাস এবং পটাসিয়াম এর প্রয়োজন।এছাড়া গাছের গোড়ায় গোবর ব্যবহার করুন।কারণ কীটনাশক স্যার হিসাবে কাজ করে থাকেন।
গাছের সুরক্ষাঃনারিকেল গাছে কোনো রোগ বা কীটপতঙ্গ আছে কিনা যাচাই করে নেওয়া উচিত মাঝে মধ্যে।গাছকে সকল সময় রোগ থেকে প্রতিরোধ রাখতে হবে।যেমন গোড়া পচা,লাল দাগ এবং কুড়ি পচা রোগ।জৈবিক এবং রাসায়নিক ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে কীটনাশক রক্ষা করুন।
পোকা মাকড় এবং রোগ থেকে প্রতিরোধ করার পদ্ধতি
নারিকেল গাছে সাধারণত যে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তাকে তা হলো পোকামাকড়,রোগবালাই এবং ইঁদুর।পোকা মাকরের মধ্যে অধিক পরিমানে ক্ষতিকারক পোকা হলো গন্ডার পোকা,লাল কেড়ি এবং উইপোকা পোকা।গাছের মাথার উপরে নরম অংশে এবং কচি পাতায় আক্রমণে ছিদ্র করে থাকে মূলত গন্ডার পোকা এবং লাল কেড়ি পোকা।যার ফলে অধিকাংশ গাছের মাথায় ছিদ্র দেখা দিয়ে থাকেন।এই সকল পোকামাকড়ের আক্রমণ দীর্ঘদিন চললে নারিকেল গাছ মারা যেতে পারেন।
আরো পড়ুন:ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কি
বাদামি চটচটে ছিদ্রের মুখে গড়িয়ে পরে আঠার মতো রস এবং গুরার মতো দেখা যায় চিবানো কাঠ।নারিকেল গাছ থেকে শব্দ শোনার জন্য কান্ডের গায়ে কান পাতলে কড় কড়ে শব্দ শুনতে পাবেন।তবে উইপোকা নারিকেল ও কচি গাছ বেশি আক্রমণ করে থাকেন।অনেক সময় ভিন্ন ভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে (যেমন ঢিবি)।ঢিবি হওয়ার ফলে গাছের গোড়া দুর্বল হতে শুরু করেন এবং ভেঙ্গে পড়ার বেশি আশঙ্কা দেখা যায়।
নারিকেল গাছের বাগানের চারদিকে এবং গাছের গোড়ায় সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।নারিকেল গাছে রোগ প্রতিকার করার জন্য প্রথমে ২ বছর গাছের গোড়া থেকে ৬০-৭০ সে.মি দুর পর্যন্ত গোলা কারের চারপাশে রোদে ভালো করে শুকিয়ে ছোট ছোট অংশ করে কেটে ৮.১০ সে.মি.উচু করে মালচিং ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।গাছের গোড়ায় পানি বেঁধে না থাকলে অতিরিক্ত আগাছা জন্মাবে না এবং মাটির দিক দিয়ে রস সংরক্ষিত থাকবে।
এবং এই গুলো পচে স্যার হয়ে গাছের শিকড়ে জৈব কীটনাশক হিসাবে কাজ করবে।মাইচিং এই ভাবে করার সময় খেয়াল রাখতে হবে গাছের কান্ডকে স্পর্স না করে।গাছের গোড়া ফাঁক রাখতে হবে সর্বনিম্ন ৮-১০ সে.মি.।মালচিং হিসাবে সাধারণ মূল কাজ করে চিনা বাদামের খোসা,ধানের তুষ,আখের ছোবড়া,কাঠের গুড়া,নারিকেলের ছোবরা,গাছের শুকনা পাতা,সমুদ্রের শ্যাওলা,বিভিন্ন খড়-কুটা,লতা-পাতা ইত্যাদি।
পোকা মাকড় প্রতিরোধ
ডাল পাতার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা:গাছের চার পাশে জমে থাকা শুকনো পাতা বা মড়া ডালগুলো প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে।এগুলো মকামাকরের উৎপন্ন বা আশ্রয়স্থল হতে পারে।
বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোল:কীটনাশক হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন পিপঁড়ে,ব্যাটারিয়া ও কেচো।নারিকেল গাছকে রোগ থেকে রক্ষা করতে পারেন (মাকড়সা এবং বিটি ব্যাটারিয়া)।
রোগ প্রতিরোধ
পাতা পচা বা ডাল পচা:নারিকেল গাছে মাঝে মাঝে পাতা পচা বা ডাল পচা রোগ দেখা যায়।এসব রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য নিয়মিত রোগবালাই সঠিক ভাবে পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়মিত জল সেচ:নারিকেল গাছের শিকর পচনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকতে দেওয়া উচিত নয়।
ধুলাবালির ও রোগজীবাণু মুক্ত পরিবেশ:গাছের বাগানের আশে পাশে কোথাও ময়লা বা দূষণ জমতে না দেওয়া।
গাছের কাটিং এবং ছাটাই:ক্ষতিগ্রস্ত বা মৃত অংশ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে যাতে পোকা ছড়ানোর কোনো সুযোগ না পেয়ে থাকেন।
নারিকেল ঝরে পড়ার কারণ ও প্রতিকার
নারিকেল মূলত অর্থকারি ফল ও তেলজাতীয় ফসল।গ্রাম অঞ্চলে অধিকাংশ বারিতে দু একটা করে নারিকেল গাছ রয়েছে।এই গাছগুলোতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।এর মধ্যে নারিকেল ঝরে পড়া প্রধান একটি রোগের সমস্যা।গাছে ফুল ধরার পর থেকে নারিকেল হওয়া পর্যন্ত ঝরে পড়ার কয়েকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে।যেমন ফুলে পরাগ,সংযোগ না হওয়া,ফলগুলোতে পোকার আক্রমণ,মাটিতে স্যার এবং উর্বরতার অভাব,নারিকেলের ভিতরের অংশে শাঁস,গঠনে ব্যাঘাত এবং মাটিতে পানির অভাব ইত্যাদির লক্ষণ।
আরো পড়ুন:কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
নারিকেল গাছে কোনো পোকা,ময়লা এবং দূষণে আক্রমণ হলে তা সময় সময়ে পরিষ্কার এবং ঔষধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।ফুল বা ফলে পোকার আক্রমণ দেখা দিলে দুই মিলি রগর পানিতে মিশিয়ে এক লিটার ফুলের উপর সঠিক ভাবে স্পে করতে হবে।গাছের কুড়িঁ বা পচা রোগ থেকে সুরক্ষা পেতে এক শতাংশ শক্তিযুক্ত বর্দো মিশ্রণ গাছের অগ্রভাগে বিশেষ করে পাতার নিচের অংশে ভালো ভাবে ব্যবহার করতে হবে।বাতাসের মাধ্যমে সাধারণ মৌমাছি পোকা এবং ফুলে পরাগায়ণ সৃষ্টি হয়।
যেসব পাতা পচণ রোগে পাতা মরে শুকিয়ে যায় সেগুলো গাছের মোটা বোট বা লেগে থাকা অংশ ভালো ভাবে না শুকানো পর্যন্ত কাটা উচিত নয়।গাছের খাদ্য কমে যাওয়ার মূল কারণ হলো গাছের সবুক পাতা কেটে ফেলা বা গাছের সবুজ ডাল ছেটে দেওয়া।খরার সময় নারিকেল গাছে পানি দেওয়ার সঠিক সময় হলো ১৫-২০ দিন পর দেওয়া উচিত।নারিকেল গাছে বিভিন্ন সমস্যার কারনে ফল ঝরে পড়েন।এমন অবস্থায় ঝরে পড়া থেকে রক্ষা পেতে ৬০ পিপিএম শক্তির ২-৪ ডি মিশ্রণ ফুলের ডাটায় কমপক্ষে ৭ দিন ৪ বার করে প্রয়োগ করলে
নারিকেল ঝরে পরার কারণ
আবহাওয়া:দীর্ঘদিন অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা তীব্র বাতাসে নারিকেল গাছে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।যা ফল ঝরে যাওয়া সম্মুখীন হতে পারে।
অপ্রর্যাপ্ত পানি:গাছের গোড়ায় বা শিকরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি জমা না থাকলে ফল ঝরে যাওয়ার সম্ভবণা থাকে।
অতিরিক্ত সার ব্যবহার:নারিকেল গাছে অতিরিক্ত কীটনাশক সার পয়োগের ফলে ফল ঝরে পরতে পারে।
ক্ষতিকর পোকামাকড় বা রোগ:নারিকেল গাছে প্রভাব ফেলতে ভুমিকা রাখে যেমন পোকামাকড় (নারিকেল মথ)এবং রোগ(নারিকেল পচন)।।যার ফলে গাছ থেকে ফল ঝরে পরার আকাঙ্কা থাকে।
প্রতিকার
যত্ন সহকারে সেচ:নারিকেল গাছে পুষ্টি উৎপাদন করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে পানি সরবরাহ করা উচিত।
সঠিক সার প্রয়োগ:গাছের পরিমাণ বুঝে স্যার ব্যবহার করা উচিত।অতিরিক্ত সার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
পোকামাকড় ও রোগ নিয়ন্ত্রণ:গাছের রোগ প্রতিকার করার জন্য নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।প্রয়োজন হলে পাঠক এবং দোকান দারের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
মৌসুমি যত্ন:সময়ের সাথে আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে গাছের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
নারিকেল গাছের শত্রু সাদা মাছি নিয়ন্ত্রণ
নারিকেল গাছে বর্তমান যুগে ব্যাপক পরিমাণে সাদা মাছির আক্রমণ দেখা যায়।সাদা মাছির আক্রমণে গাছের পাতা সাদা হয়ে যাচ্ছে।দিন দিন ফলের আকার ছোট হচ্ছে।আগের তুলনায় বর্তমান নারিকেলের মধ্যে পানি শুকিয়ে কম দেখা যায়।নারিকেল গাছের পাতা সাদা হওয়ায় কিছু অঞ্চলে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে যে এটা নাকি করোনা ভাইরাস।যেমন যশোর,সাতক্ষীরা,ঝিনাইদহ,ফরিদপুর,খুলনা,বাগেরহাট সহ স্থানে।কিন্তু না মূলত এটি পোকা-মাকড়ের আক্রমণে দেখা গিয়ে থাকে।
সাদা মাছি নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য তুলার মতো আবাসস্থল তৈরি করেন।বিভিন্ন স্থানে এর আগে ইরিওফাইট,গ্রীরোনিট নামক রোগ নারিকেল গাছে এক ধরনের বিশেষ মাকড়ের আক্রমণ বিস্তার লাভ করে।সাদা মাছির ইংরেজি শব্দ হলো Rugose spiralling whitefly এবং এর সংক্ষিপ্ত নাম (RSW)।বর্তমানে বাংলায় বিজ্ঞানসম্মত গবেষনা অনুযায়ী নারিকেল গাছের সাদা মাছি বলতেই পারেন।যদি ও আজ পর্যন্ত বেশি একটা তথ্য বিজ্ঞানিরা সংগ্রহ করতে পারেনি।
সাদা মাছি শনাক্তকরণ
নারিকেল গাছের কচি পাতা এবং কচি ডাব থেকে রষ চুসে ছিদ্র করে।সাদা মাছির তুলনায় নারিকেল গাছের পূর্নাঙ্গ দশা ৩ গুন(যা ২.৫ মিলিমিটারের)বড় হয়ে থাকেন এবং বড় হবার সঙ্গে প্রচুর অলস হয়ে পড়েন।একটি পরিপূর্ণ মাছির ডানার রং সাদা এবং অগ্রভাগের ডানায় হালকা বাদামি রঙ্গের হয়ে থাকে।পুরুষ মাছির গঠনে দেখা যায় সাড়াশির ন্যায়।
সাদা মাছির জীবন চক্র
মহিলা মশার ডিম পারার প্রধান স্থান হলো সাধারণত কচি পাতা বা নিম্নভাগে বৃত্তাকার অথবা সর্পিকলার নকশা।এরপর ডিম পাড়া শেষে মোম জাতীয় সাদা রংগের পদার্থ দিয়ে ডেকে দিয়ে থাকেন।ডিমগুলো দেখতে হালকা সাদা থেকে হালকা হলুদবর্ণের দেখা যায়।যেমন বাড়ির দেওয়াল,গাড়ির উপরিভাগ,জানালা এবং কাচের মতো মৃসণ জায়গা ডিম পেরে থাকেন।সাদা মাছির মধ্যে মোট ৫ টি জীবনচক্রের দশা রয়েছে।
সাদামাছি নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল
নারিকেল গাছের যে সকল পাতায় কালো ছোপ বা Block sooty Mould দেখা যায় সে স্থানে ১% স্টার্চের দ্রমণ স্পে করুন।স্টার্চ শুকিয়ে যাওয়ার পর পাপড়ের মতো কালো ছোপ গুলো একাই উঠে পড়ে যাবে।
নারিকেল গাছের বিভিন্ন রোগের লক্ষণ
মাইজ মরা (But rot)রোগ
prytophthora palvimora ছত্তাক জনিত রোগের কারনে এই রোগ হয়ে থাকে।গাছের গোড়া গুপ্ত থাকার ফলে যে সমস্যাগুলো সাধারণ ভাবে দেখা যায় তা হলো রোগের প্রাথমিক অবস্থায় মাইজ,মাইজের চার পাশের অংশ। সাধারণ ভাবে নারিকেল গাছের পাতা নরম ও কোমল বলে ছত্তাকের আক্রমণ অধিক মাত্রায় দেখা যায় এবং ছত্রাক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।গাছের গোরায় পানি জমে থাকার ফলে অগ্রভাগ মাটিতে পড়ে যায়।সাধারণত prytophthora palvimora এই রোগে ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
পানি ঝরা(Bleeding)রোগ
অল্প দিনের বা ছোট নারিকেল গাছ এই রোগ আক্রান্ত হওয়ার ফলে গাছ ডোলেপড়ে বা নষ্ট হয়ে যায়।উন্নত বা বড় গাছে পানি ঝরা রোগ দেখা দিলে তার প্রভাবে ২-৩ বছরের মধ্যে ডলে পরতে পারে।ceratocystis paradoxa রোগের লক্ষণে নারিকেল গাছ ছত্রাক আক্রমণে পানি ঝরা রোগ দেখা দিয়ে থাকে।
পাতায় দাগ ধরা(leaf spot)রোগ
pestalotia palmarum রোগের কারনে পাতায় দাগ ধরা রোগ ও ছত্রাকের আক্রমণ হয়ে থাকে।প্রথম দিকে এই রোগ পাতার বাহিরের অংশে দেখা যায়।এই রোগের লক্ষণ সাধারণত পাতারের গায়ে বা উপরে হলুদ রংগের ছোট ছোর অধিক পারমানে বা অসংখ্যাক দাগ পরে।এই রোগের প্রভাব দীর্ঘদিন থাকার ফলে পাতার উপর ধূসর বর্ণ ধারণ করে থাকে।এবং বেশ কিছু পাতার অংশ মরে ধূসর হয়ে যায়।এর ফলে পানির অভাব বন্টন প্রভাব ফেলে এবং কচি পাতার আগা বা শিকড় শুকিয়ে কুচরিয়ে যায়।
নারিকেল গাছের বিভিন্ন রোগের প্রতিকার সম্পর্কে
নারিকেল গাছে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি হতে পারে যার প্রভাবে গাছের বৃদ্ধি এবং উৎপাদনে ক্ষতি করতে পারে।তাই নারিকেল গাছে কোনো রোগ দেখা দিয়ে থাকলে যথা সময়ে কীটনাশক এবং স্যার প্রয়োগ করা জরুরি।গাছের বৃদ্ধি ভালো হলে তার ফলন ও ভালো হয়ে থাকেন।
কোকোনাট লীফ কটন ব্লাইট (Coconut leaf blight)
কারন:এটি একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ যা নারিকেল গাছের কচি পাতা,কচি ডাব এবং কচি ডালের মূল কে আক্রমণ করে
আরো পড়ুন:বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম
প্রতিকার:কোনো অংশে এই রকম রোগ দেখা দিলে তা সঙ্গে সঙ্গে কেটে ফেলা উচিত।গাছের চারপাশে পরিষ্কার এবং রোগ থেকে সুরক্ষা রাখার জন্য Fungicite ব্যবহার করা যেতে পারে।
কোকোনাট রুট উইল্ট ডিজিজ(Coconut root wilt disease)
কারণ:এটি একটি ব্যাকটেরিয়া রোগ যা নারিকেল গাছের মূল শিকরকে আক্রমণ করে।এবং পোচন রোগ এর লক্ষণ শুরু হয়ে থাকে।
প্রতিকার:রোগ মুক্ত বীজ রোপণ এবং মূল ব্যবহার সঠিক নিয়মে কীটনাশক ও স্যার প্রয়োজগের মাধ্যম এই রোগ থেকে প্রতাকার করা সম্ভব।কোনো গাছে অধিক মাত্রায় হলে তা উঠিয়ে ফেলা দেওয়া উচিত।
কোকোনাট শেল শাঁখ(Cocunut shell weevil)
কারণ:এটি সাধারণত নারিকেল খোসার মাঝে কীট হিসাবে আক্রমণ করে।
প্রতিকার:পোচন এবং কীট ধরা খোসাগুলো যাচাই করে ধ্বংস করা উচিত।যথাসময়ে কীট নাশক ব্যবহার ফলে এর সমাধান হতে পারে।
কোকোনাট মাইট(Coconut mite)
কারণ:এটি নারিকেল গাছের পাতা এবং ফুল ক্ষুদ্র কীট হিসাবে ক্ষতি করতে।
প্রতিকার:যথাসময়ে পদক্ষেপ গ্রহন এবং স্পে ব্যবহারের ফলে মাইট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।বিশেষ করে গাছের পাতা ও অন্যান্য অংশ রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে।
পাম হাইলাইট(palm leaf spot disease)
কারন:নারিকেল গাছের পাতা এবং অন্যান্য অংশ ক্ষতির লক্ষণ বা দাগ সৃষ্টি করে ফাঙ্গাল রোগ।
প্রতিকার:যথাসময়ে Fungicide ব্যবহার এবং যে অংশে রোগ আক্রমণ করেছে সে অংশ কেটে ফেলা।
নারিকেলে পোকা(Coconut bark burer)
কারণ:এটি সাধারণত নারিকেলের খোসায় ছোট ছোট গর্ত আকারে ক্ষতি করে।
প্রতিকার:পোকাগুলো আক্রান্ত গাছ থেকে সংগ্রহ এবং পোকানাশক স্যার প্রয়োগ করা উচিত।
নারিকেল পাতায় ব্লাইট রোগ
নারিকেল গাছের ছত্রাক জনিত রোগ হলো ব্লাইট রোগ।যা সাধারণত অধিকাংশ গাছের পাতায় আক্রমণ করে।এই রোগ সৃষ্টি হবার উৎস মুসারিয়াম এবং পিথিয়াম।এই রোগটি প্রথমে নারিকেল গাছে হলুদ এবং বাদামী রঙ্গের বর্ণ ধারন করে থাকে।এবং যথাসময়ে কীটনাশক ব্যবহার না করে ফলে আসতে আসতে সকল গাছের মধ্যে ছড়িয়ে পারতে পারে।দীর্ঘদিন এই রোগ থাকার প্রভাবে নারিকেল গাছের পাতা দর্বল এবং বৃদ্ধি কম হয়ে থাকে।
ব্লাইট রোগের লক্ষণগুলি হলো
- নারিকেল গাছের পাতা থেকে হালকা হলুদ এবং সাদা বর্ণের দাগ দেখা দেয়।
- গাছের গায়ে কালো রংগের দাগ এবং বাদামী ধূসর বর্ণের,পাতার কিনারায় গা Dark দেখা যায়।
- গাছের সকল পাতা ও শিরাগুলো শুকিয়ে যায় এবং গাছের পুরো পাতা শুকিয়ে গাছ হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
- গাছের বৃদ্ধি কম হয়ে থাকে বেশি উচু হয় না,ফল কম হয়ে থাকে।
এই রোগের প্রতিকার করার করণীয়
বালাই পরিদর্শন ও দ্রুত প্রতিকার:নারিকেল গাছের যে কোনো অংশে কোনো রোগ দেখা দিলে সে অংশ যথাসময়ে কেটে ফেলা উচিত।
ছত্রাকনাশক ব্যবহার:স্পে করার মাধ্যমে গাছ থেকে ছত্রাক নাশক রোগ যেমন ফুসারিয়াম ও পিথিয়াম সুরক্ষা রাখা সম্ভম।
পানি নিঃসরণ নিশ্চিত করা:জমি নির্বাচন করার সময় উচুঁ জায়গা বেচে নেওয়া উচিত।কারন জমিতে অতিরিক্ত পানি জমে থাকা জামে না।
উপসংহার
নারিকেল গাছ থেকে প্রতিকার করার জন্য নিয়মগুলো মেনে চলুন।গাছ থেকে রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করবেন সে বিষয়ে আমরা ইতো মধ্যে আলোচনা করেছি।আপনি যদি নারিকেল গাছ থেকে রোগ প্রতিকার করতে চান তাহলে আপনাকে সকল বিষয়ে জানতে হবে।রোগ প্রতিকার করার জন্য যথা সময়ে কীটনাশক ব্যবহার এবং আগাছা পরিষ্কার করা উচিত।
আমাদের সম্পূর্ণ পোস্টি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্যাক ধন্যবাদ।আপনি যদি এই ধরনের পরামর্শ প্রতিদিন পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট পেইজটি ফলো করে রাখবেন।কারণ আমরা নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল নিয়ে আলোচনা করে থাকি।
লুকাস৩৬৫ জুরে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url