শিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও চিকিৎসা
সাধারণত সুস্থ শিশুকে ডেঙ্গুবাহী মশা কামড়ানোর ফলে শরীরে মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।এবং এই ভাইরাস মশা রক্ত সংগ্রহের সর্বনিম্ন চার থেকে দশ দিনের মধ্যে শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়।
অবশ্য বর্তমানে আমাদের চার পাশে ডেঙ্গুর যেহেতু প্রাদুর্ভাব।তাই শরীরে জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের চিকিৎসার পরামর্শ নেওয়া উচিত।কারণ আগের তুলনায় বর্তমানে ডেঙ্গুর লক্ষণ বদলে গিয়েছে।
সূচিপত্রঃশিশুদের শরীরে জ্বরের লক্ষণ দেখলে চিকিৎসা নেওয়া
- শিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
- শিশুদের ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে করনীয় এবং পদ্ধতি
- আলাদা জায়গায় জলাধার তৈরি না করা
- শিশুদের ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার প্রকারভেদ
- বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক পদক্ষেপ
- শিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের জটিলতা
- শিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা
- শিশুদের সুরক্ষা রাখতে প্রয়োজনীয়
- উপসংহার
শিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
ডেঙ্গু জ্বর হলো সাধারণ একটি ভাইরাস মশার ভাইরাল সংক্রমণ যা গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে বেশি প্রবাহিত হয়।এডিস মশা সাধারণভাবে এডিস ইজিপ্টাই এই ভাইরাস ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে থাকেন।এটি একটি জ্বর এবং শরীরে মধ্যে ফ্লু এর লক্ষণে হিসাবে প্রবাহিত প্রকাশ পেয়ে থাকে।সাধারণত অধিক পরিমানে দীর্ঘদিন তীব্র ব্যথার কারণে হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু রোগ কি বিস্তারিত
ব্রেকবোন ফিবার' হিসাবে উল্লেখ করা হয়ে থাকেন।ভাইরাসটি মশার কামড়ের মধ্যে দিয়ে ছড়ায় কিন্তু ব্যক্তি শরীর থেকে অন্য একটি ব্যক্তির শরীরে ছড়ায় না।লক্ষণগুলো সাধারণত সর্বনিম্ন সংক্রমণে ৩ থেকে ৮ দিন পর দেখা দিয়ে থাকেন।যার মধ্যে রয়েছে শরীরের অধিক তাপমাত্রা ১০৪°F (ফ্যারেনহাইট) এবং ৪০°C (সেলসিয়াস)তীব্র মাথা ব্যথা, চোখের নিচে ব্যাথা,জয়েন্টে ব্যাথা এবং বমি বমি ভাব।
সাধারণভাবে বমি এবং এটি একটি ফুসকুড়ি স্বতন্ত।বেশিরভাগ শিশুদের ক্ষেত্রে হালকা হয় এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে গিয়ে থাকে (যেমন ১-২ দিন এর মধ্যে)। আবার কিছু কিছু শিশুদের ক্ষেত্রে অধিক পরিমাণে দেখা যায় তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া জরুরি বা গুরুত্বপূর্ণ।
লক্ষণ সমূহ
- হালকা থেকে তীব্র জ্বর
- গা ব্যথা,শরীর ব্যথা
- মাথা ব্যাথা
- চোখের পিছনে ব্যাথা
- বমি বমি ভাব
- ত্বকে লালচে র্যাশ
- অবসাদ বা দুর্বলতা
- ক্ষুধামান্দ্য
ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত শিশুদের উপর বিপদজনক এবং জীবনঘাতী ঝুঁকি ডেকে নিয়ে আসতে পারে।ডেঙ্গু জ্বর সাধারণভাবে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে গুরুতর অসুস্থতার প্রভাব বেশি দেখা গিয়ে থাকেন।মাঝে মধ্যে ডেঙ্গু রোগের প্রবণতা অধিক মাত্রায় উৎপত্তি হওয়ার কারণে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বল এবং শরীর থেকে রক্তপাত,অঙ্গ ব্যথা সময় মতো চিকিৎসা প্রধান করা না হলে মৃত্যু হতে পারে।
র্যাঁশ বা চামড়ার পরিবর্তনঃ
ভাইরাস ডেঙ্গু রোগ শরীরে আক্রান্ত হওয়ার কয়েক দিন পর থেকে শিশুদের শরীরের চামড়ায় র্যাশ বা লালছে দাগ বের হতে শুরু করে দেন।সাধারণত প্রথম দিকে dark র্যাশের মত দেখতে শুরু হয়।এবং পরে পিপল ও চামড়া ফাটল শুরু করতে পারেন।এই র্যাশ সমস্যার সমাধান কিছুদিন পর নিরাময় হয়ে যায়।তবে এই রোগের কারণে শিশুদের শরীরে মধ্যে ত্বকে চুলকানি হতে পারে।
অরুচি এবং খাবার খেতে না চাওয়াঃ
সাধারণত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত শিশুরা অরুচি বা সঠিক ভাবে খাবার খেতে চায় না।শিশুদের মধ্যে সাধারণত এটি একটি বৈষম্য বা উপসর্গ।নিজ ইচ্ছা কৃত ভাবে খাবার খেতে চায় না এবং খাবার খেতে গিয়ে বমি করে দিতে পারেন।খাবার সঠিকভাবে না খাওয়ার ফলে দুর্বল এবং অসুস্থ হয়ে করতে পারে।
বমি, ডায়রিয়া এবং পেটের ব্যথাঃ
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত শিশুদের পেটে সাধারণ ভাবে সংক্রমণ করতে পারে।যার কারণে শিশুদের শরীরে বমি এবং ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে।এছাড়া পেট ব্যাথা অস্বস্তি অনুভব হতে পারে।পেটের সাধারণ অন্যান্য সমস্যার মত না হলেও ডেঙ্গু রোগের আক্রান্ত শিশুদের এই লক্ষণগুলির সম্পর্ক রয়েছে।
রক্তপাত ও রক্তক্ষরণঃ
শিশুদের ডেঙ্গু রোগ আক্রান্ত গুরুতর লক্ষণ হলো রক্তপাত সমস্যার দেখা দিতে পারে। সাধারণত ডেঙ্গু রোগের প্রভাবে রক্তপাত নাক দিয়ে,দাঁতের মারি থেকে এবং পেটের বিভিন্ন অংশের অভ্যান্তর থেকে হতে পারে।আবার কিছু সময় শিশুদের মলের মধ্যে রক্তপাত সমস্যা দেখা যেতে পারে।এছাড়া রক্তচাপ বন্ধ হয়ে যাওয়া,নাক দিয়ে রক্ত পড়া, বমির সাথে পড়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের অনুভূতি এবং গুরুতর হতে পারে। যা সময়ের সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ বা চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুদের ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে করনীয় এবং পদ্ধতি
শিশুদের ডেঙ্গু রোগ থেকে প্রতিরোধ করার জন্য প্রথমে এমন পরিবেশ বেঁচে নিতে হবে যেখানে শিশুদের মশা কামড়াতে না পারে।প্রথমে মশা যেনো উৎপত্তি হতে না করে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।এবং উৎপত্তি হয়ে থাকলে তা ধ্বংস করার ব্যবস্থা এবং পদক্ষেপ নিতে হবে। এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার এবং লোনা পানি থেকে উৎপত্তি হয়ে থাকে।যেমন ফুলের টব,গাড়ির টায়ার বা ডাবের খোলায় বৃষ্টির পানি বেঁচে থাকার ফলে ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ আর্টিকেল লেখার সহজ নিয়ম
তাই এডিস মশার লার্ভা যেখানে উৎপত্তি হয় সে জায়গা চিহ্নিত করে সেগুলো নষ্ট করে ফেলতে হবে।বাড়ির আশেপাশে সকল জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং কোন জায়গা ময়লা আবর্জনা বা পানি আটকে থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে।শিশুদের যখন বিছানায় শুয়ে রাখবেন তখন মশারি টানিয়া রাখতে হবে।সাধারণত শিশুদের বেশির ভাগ সময় মশার কবল থেকে রক্ষা করার জন্য মশারির মধ্যে রাখা জরুরি।
এছাড়া হসপিটালে যদি কোন শিশু চিকিৎসার জন্য আসে তাকে মশারির মধ্যে রাখা উচিত।কারণ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত কোন মশা অন্য একটি শিশুকে কামড়ালে তার মধ্যে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়তে পারেন।মশার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অন্য একটি পদক্ষেপ হলো যেমন ফুল হাতা শার্ট এবং ফুল প্যান্ট পরিয়ে রাখতে পারেন।শিশুরা যখন বাহিরে খেলতে গিয়ে থাকেন তখন শিশুদের শরীরে জেল বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। শিশু যদি বয়সের তুলনায় অনেক ছোট হয় তাহলে মসকুইটো রেপেলেন্ট বেল্ট বা প্যাচ ব্যবহার করতে পারেন।
পাত্র ও ট্যাঙ্ক পরিষ্কার রাখাঃশিশুরা যে জায়গা গুলোতে খেলাধুলা বা ছোটা ছুটি করে থাকে সে জায়গায় পাত্র বা পাত্রীকাতে পানি জমে থাকলে সেগুলো সাথে সাথে পরিষ্কার করা এবং রোদে শুকিয়ে রাখা দরকার।
প্লাস্টিকের পাত্র বা বাড়ির পাশের নালায় পানি জমে থাকলে তা দ্রুত খালি
করে ফেলা প্রয়োজনীয়।বৃষ্টি বাদল বা বাড়ির যেকোনো কারণে যদি পানি বেদে থাকে
তাহলে নিয়মিত পরিষ্কার করে ফেলা।
আলাদা জায়গায় জলাধার তৈরি না করা
সাধারণত বাড়ির পাশে বা বাড়ির মধ্যে যদি জলাধার বা পুকুর থাকলে সেখানে মশার উৎপত্তি হবার আগে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করতে একাধিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।যার মধ্যে সাধারণ প্রথম লক্ষণ হলো মশার প্রজনন স্থল সঠিক ভাবে নির্মান করা।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং হারাম নাকি হারাম বিস্তারিত
মশা সাধারণত দাঁড়িয়ে থাকা পানির মধ্যে ডিম পেড়ে থাকে।তাই জল ধারা এবং দাঁড়িয়ে থাকা পানিকে একে অপরের মিশ্রনে প্রজনন স্থল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছেন।এই জলধারা যদি সঠিক ভাবে পরিষ্কার না করা হয় বা পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করা না হয় তাহলে এডিস ভাইরাস জনিত ডেঙ্গু মশা বিস্তার আরো সহজ করে তোলে।
মশার প্রজনন স্থল এবং জলধারার সম্পর্কেঃ
ডেঙ্গু রোগের প্রধান বাহক হলো এডিস মশা।এই মশাগুলো সাধারণভাবে দাঁড়িয়ে থাকা পানি যেমন পুকুর, ডোবা এবং বালতি, ফুলের টব, কুয়া ও বৃষ্টির পানি জমে থাকা পাত্রে ডেঙ্গু মশা ডিম পারে এবং সেখান থেকে উৎপত্তি বেশি হয়ে থাকে।এই মশাগুলো সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যেই মশায় পরিণত হয়।
ডেঙ্গু রোগ থেকে বা মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মশার প্রজনন স্থলকে দুর করা অত্যান্ত জরুরি এবং প্রয়োজনীয়।অনেক সময় আমরা আমাদের বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি বা আবর্জনা পরিষ্কার করে থাকিনা ফলে মশা সে জায়গায় ডিম পেড়ে বাচ্চা ফুটিয়ে নতুন করে উৎপত্তি বৃদ্ধি বাড়িয়ে তোলেন।
বিশেষ করে শহর অঞ্চলে এই রকম নালা বেশি দেখা যায়।কারণ শহরাঞ্চলে বৃষ্টির পানি বের হতে পারেনা যার কারণে মশার বিস্তার বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।যেহেতু এই মশাগুলো সাধারণ ভাবে পানির উপর নির্ভরশীল। তাই সাধারণভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা না রাখার ফলে ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তার ঘটতে পারে।
জলধারের স্থান নির্বাচন এবং পরিষ্কারের গুরুত্বঃ
বাড়ির আশেপাশের যেকোনো জায়গায় ডোবা, পুকুর নলকূপ এবং নালা তৈরি আগে অবস্থানে নির্বাচন খুবই জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ। যদি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে কোন জায়গায় জল ধারা নির্মাণ করতে হয় তবে তা এমন স্থানে করা উচিত সাধারণ ভাবে যে জায়গা পানি জমে না থাকে দীর্ঘদিন যাবত ধরে এবং সহজে পানিগুলো চলাচল করতে পারে।
এর ফলে মশার প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে।তাছাড়া যদি বাড়ির পাশে কোনো জলাধার তৈরি করা হয়।তবে তা সময়ের সাথে সাথে পরিষ্কার করতে হবে।কারণ সাধারণ ভাবে মশা যেনো ডিম পাড়ার কোনো সুযোগ না পেয়ে থাকে।যদি বাড়ির আশেপাশে কোথাও পানি জমে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে মশার উৎপত্তি এবং আবির্ভাব বিস্তার প্রজনন স্থল হয়ে উঠবে।
নগর উন্নয়ন এবং জলাধারঃ
নগর এলাকায় মশার উৎপত্তি কমানোর বিস্তার একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। যেখানে শহরের তুলনায় সীমানা বড়,সেখানে প্রাকৃতিক জলধার কমে গিয়ে থাকেন।মানুষের প্রয়োজনের ক্ষেত্রে কৃত্রিম জলাধার তৈরি করা হয়।তবে যদি সেখানে সময়ের সঙ্গে পরিষ্কার পরিছন্নতা রাখা না হয় তাহলে ডেঙ্গু মশার বিস্তার প্রজনন স্থল বৃদ্ধি পেতে থাকে। যেমন নালা,ড্রেন বা স্থানগুলো পরিষ্কার না করা।
শিশুদের ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার প্রকারভেদ
ডেঙ্গু রোগ সাধারণ মশার কামড়ের মাধ্যমে ছরিয়ে থাকে।এটি সাধারণত ডেঙ্গু মশার মাধ্যমে ছরিয়া থাকেন।সাধারণত দুটি মশার কারণে ডেঙ্গু রোগ হয়ে থাকে যেমন Aedes eagypti ও Aedes albopictus এই ভাই পরিবহন করে থাকেন।শিশুর এই রোগে আক্রান্ত হলে জীবনের ঝুকি বেড়ে গিয়ে থাকে।কারণ তাদের শরীরে এখন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়নি। এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে।সাধারণত ডেঙ্গু রোগ ভাইরাস একাধিক স্ট্রেইন দ্বাড়া ঘটে।
যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ডেঙ্গু রোগের ধরন যেমন ডেঙ্গু এক ডেঙ্গু তুই ডেঙ্গু তিন ডেঙ্গু চার।প্রতিটি লক্ষণ স্ট্রেইন দ্বারা শরীরের মধ্যে প্রবাহিত ভিন্ন ধরনের হতে পারে।কিন্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণ গুলির মধ্যে রয়েছে ফিভার শরীর ব্যথা,র্যাশ,মাংস পেশিতে যন্ত্রণা এবং শরীরের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার ফলে শিশুদের জীবনের ঝুঁকে বেড়ে যেতে পারে।
জ্বরঃশিশুদের শরীরে ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান লক্ষণ হলো হঠাৎ করে উচ্চ তাপমাত্রা যেমন ১০৩° থেকে ১০৪° ডিগ্রি ফেরেনহাইট পৌঁছাতে পারে। এই জ্বর কয়েক দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যেতে পারে।
ত্বকে র্যাশঃসাধারণ ভাবে শিশুদের শরীরে ডেঙ্গ রোগের সাথে ত্বকে র্যাশ দেখা দিতে পারে।
তৃষ্ণা বা অজ্ঞান ভাবঃডেঙ্গু জ্বরের ফলে শিশুদের মধ্যে তীব্র তৃষ্ণা,অস্বত্বি এবং মাঝে মধ্যে অজ্ঞান হবার প্রভাব দেখা দেয়।
ডেঙ্গু শক সিনড্রোমঃএটি সাধারণত শিশুদের ডেঙ্গু রোগের জটিল এবং মারাত্মক প্রশোজনীয় রক্তচাপ হারাতে পারে এবং শরীরের অঙ্গের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারঃশিশুদের শরীরের রক্তচাপ কমে যাওয়ার ফলে অন্তর্গত রক্তনালীর ক্ষতির সমস্যা দেখা দিতে পারে যা জীবনের ঝুঁকে বাড়িয়ে দিতে পারে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিল পদক্ষেপ
বাড়ির আশে পাশের যে কোন জায়গায় আইসক্রিম বা দইয়ের পাত্র ফেলে রাখা যাবে না।কারণ বৃষ্টির ফলে এর মধ্যে পানি জমতে পারে।হয়ে উঠতে পারে মশার বংশবিস্তারে আবির্ভাব।বরং অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কোনো এক নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দিন।যাতে যথা সময়ে পরিষ্কার কারীরা সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
যেমন ডাবের খোলা,নারিকেলের খোলা, বালতি এবং ফুলের টব ইত্যাদি পানি জুমতে পারে এমন সবকিছু বিষয়বস্তুর প্রতি খেয়াল রাখুন।আবার পানি জমতে পারে এমন ময়লা যেখানে সেখানে ফেলা উচিত নয় যে গুলোর মধ্যে পানি বেঁধে থাকতে পারে।তাই সব ধরনের ময়লা একটি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।
বর্জ্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশনঃসাধারণভাবে সঠিক সময়ে গ্রাম অঞ্চলে বা শহরে নিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহ করা উচিত।বর্জ্য যথাযথ সঠিক সময়ে পরিষ্কার না করার ফলে পানির উৎস পরিণত হতে পারে যা মশার বংশবিস্তার এবং বংশবৃদ্ধি ঘটায়।
আবর্জনা অপসারণের নির্ধারিত স্থানে ফেলাঃডেঙ্গু মশা যেনো উৎপন্ন হতে না পারে তার জন্য রাস্তা বা করা জায়গায় আবর্জনা না ফেলা সে বিষয়ে সবার মাঝে সচেতন করা উচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ।
ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে জনগণের ভূমিকাঃডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করা শুধু সরকার বা প্রশাসনের নয় বরং জনগণের ও সচেতন হতে হবে।
বাড়ির চারপাশে পরিষ্কার রাখাঃডেঙ্গু মশা প্রতিরোধ করতে যেমন বাড়ির ছাদ, উঠান এবং বাগানসহ বাড়ির সকল জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রাখতে হবে। পানি জমতে পারে এমন বস্তু বা ড্রেন না রাখা।
শিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের জটিলতা
যেহেতু শিশুদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তুলনায়।তাই শিশুদের ডেঙ্গু রোগ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গ পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।যখন ডেঙ্গু জ্বর দীর্ঘদিন যাবত রয়ে যায় তখন শিশুর শরীরে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
এসব মারাত্মক ঝুঁকি জীবন বিপন্ন করে দিতে পারে।এবং জীবন মৃত্যুর ঝকির দিকে নিয়ে যেতে পারে। সাধারণত দেখা যায় ডেঙ্গু জ্বর শরীর থেকে ৭ দিনের মধ্যে ছেড়ে গিয়ে থাকে।তবে দীর্ঘদিন যাবত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকার ফলে কিছু কিছু শিশুর জীবন বিপজ্জনক আকার ধারণ করতে পারে।
গুরুতর রক্তক্ষরণঃ
ডেঙ্গু রোগের অন্যতম শিশুদের বড় ধরনের জটিলতা হলো রক্তকরণ।ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে শিশুদের শরীরে রক্তক্ষরণ শুরু হতে পারে।যেমন যা গলায়,চোখের পলকে,নাক ও মৃথথলিতে দেখা দিয়ে থাকে।প্লাটিলেটের ঘাটটির ফলে শিশুদের শরীরে রক্ত জমাট ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এবং ছোট আঘাতের ফলে রক্ত ক্ষরণের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।শিশুদের শরীর থেকে রক্ত ক্ষরণ যখন অধিক মাত্রায় বেড়ে যায় তখন মৃত্যুর ঝুকে বেড়ে গিয়ে থাকে।
অঙ্গ পতঙ্গের অকার্যকর হওয়াঃ
সাধারণত ডেঙ্গু ভাইরাস শিশুদের শরীরে প্রবাহিত হওয়ার কারনে কখনো কখনো অঙ্গ পতঙ্গগুলোকে বিপদ জনক এবং মারাতক ক্ষতির প্রভাবে ফেলতে পারে।যেমন এটি সাধারণত কিডনি, লিভার এবং হৃদরোগ ইত্যাদির কার্য কম কে বাধা গ্রস্ত করে তুলতে পারে। যা শেষ পর্যন্ত শিশুদের শরীরের অঙ্গ বিকলন ঘটাতে পারে।ডেঙ্গু রোগের প্রভাবে শিশুদের কিডনি ও লিভারের চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে শিশুর জীবন মারাত্মক বিপদজনক হতে পারে।
ডেঙ্গু এনসেফালোপ্যাথিঃ
এটি সাধারণত শিশুদের জীবনের জন্য বিপজ্জনক ঝুঁকির জটিলতা।ডেঙ্গু রোগের প্রভাব অধিক মাত্রায় হওয়ার কারনে মস্তিষ্কে ক্ষতির প্রভাব সৃষ্টি করে।এতে শিশুর মাথায় মারাত্ক ভাবে মস্তিষ্কে কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটে।যার প্রভাবে মাথায় খিচুনি, মারাত্মক ভাবে চাপ সৃষ্টি করে এবং স্নায়ুর ক্ষতির সমস্যা দেখা পারে।এসব লক্ষণ সাধারণ ভাবে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
শিশুদের জন্য ডেঙ্গু জ্বরের ঝুঁকিঃ
ডেঙ্গু রোগের ফলে শিশুদের জীবনের ঝুঁকি অনেক বেশি।কারণ শিশুদের শরীরে এখনো পূর্ণ ভাবে রোগ প্রতি রোধের ক্ষমতা হয়নি।প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের প্রতিরোধের ক্ষমতা কম থাকায় তাদের শরীরে ভাইরাস দুর্ত্ব আক্রমণ করতে পারে এবং দুর্ত্ব ভাবে খারাপ হতে থাকে।ডেঙ্গু রোগের কারণে শিশুর শরীরে তরল শোষনের ক্ষমতা কমে যায়। যার কারণে শিশুদের শরীরের পানির ঘাটতির অভাব দেখা দিতে পারে।যা আরো কঠিন ভাবে জটিলতা সৃষ্টি করে।
শিশুদের ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা
সাধারণভাবে ডেঙ্গু জ্বর নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই।ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে কিছু কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় এবং রোগীর স্তিশীল রাখা।শিশুদের শরীরে প্রয়োজন পড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি এবং সল্ট স্যালুশন দেওয়া প্রয়োজনীয়।কারণ ডেঙ্গু জ্বরের কারণে তরল ও ইলেক্ট্রোনাইট ধূর্ত কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়।ডেঙ্গু জ্বরের ফলে শিশুদের শরীর থেকে ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা অন্য যেকোন উপযুক্ত ব্যথা না শোক প্রয়োগ করা হয়।
আরো পড়ুনঃনগদ অ্যাপ দিয়ে ইনকাম সম্পর্কে
তবে শিশুদের শরীরে অ্যাসপিরিয়ন বা আইবুপ্রোফেন দেওয়া উচিন নয় কারণ তা বাচ্চাদের প্লাটিলেটের ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে।ডেঙ্গু জ্বর দীর্ঘদিন যাবত শরীরে থাকার ফলে বমি বা ডায়রিয়া রোগের সমস্যা দেখা দিলে শিশুকে রোজার সোলে বা ঘরোয়া স্যলুশন দিয়ে হাইড্রেট রাখা উচিত। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত শিশুকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হসপিটালে ভর্তি করা জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যাজমেটিক চিকিৎসাঃ
ডেঙ্গু জ্বর কমানোর জন্য সাধারণভাবে শিশুদের প্যারাসিটামল শরীরের অধীক তাপমাত্রা কমানোর জন্য দেওয়া হয়।এবং শরীর সুস্থ সবল রাখার জন্য তরল জাতীয় খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাবে শরীরের পানি কমে যাওয়ার কারণে শরীরে জলের ভারসাম বজায় রাখতে শিশুকে বিভিন্ন ধরনের দ্রবন ব্যবহার করতে হয় যাতে শিশুর শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিতে না পারে।
হাসপাতালের চিকিৎসাঃ
শিশু যদি ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাবে সিনড্রোম বা গুরুতর রক্তকরণের শিকার হয়ে থাকে তবে তাকে যত দূরতো জরুরী ভিত্তিক ভাবে হসপিটালে ভর্তি করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিবেন।যেমন রক্তের প্লাটিলেট সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা,রক্ত সঞ্চালনের জন্য স্যালাইন বা রক্ত দান করা ইত্যাদি।
প্রতিরোধঃ
ডেঙ্গু রোগ থেকে প্রতিরোধ পেতে প্রধান মাধ্যম হলো এডিস মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া।যেমন মশারি ব্যবহার, স্প্রে এবং বংশ বৃদ্ধি রোধে জমে না থাকা এবং পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন।শিশুকে মশার থেকে প্রতি রক্ষা করার জন্য মশারি,মশা তাড়ানোর ক্রিম এবং মশার হাত থেকে বাঁচানোর বিশেষ পোশাক পরিধান জুরুরি।বাড়ির আশেপাশে ড্রেন বা নলকূপ থাকলে তা যথাসময়ে পরিষ্কার করা।মশা যেনো উৎপত্তি বা বৃদ্ধি পেতে না পারে সে ক্ষেত্রে পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে হবে।
শিশুদের সুরক্ষা রাখতে প্রয়োজনীয়
ডেঙ্গু একটি এডিস বাইরাস মশা বাহিত ভাইরাল রোগ।সাধারণত বর্ষাকালে ডেঙ্গু মশা উৎপত্তি বেশি হয়ে থাকে।বর্তমান সময়ের বছরের বেশিরভাগ সময় ধরে ডেঙ্গু মশা দেখা যাচ্ছে।সাধারণত আগের তুলনায় বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা অধিক মাত্রায় বেশি দেখা যাচ্ছে।তাই আপনার শিশুকে ডেঙ্গু জ্বর থেকে রক্ষা রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
মশার পজনন স্থল ধ্বংস করাঃ
সাধারণত এডিস মশার কামরের হাত থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করা সম্ভব।সাধারণত এডিস মশা আবদ্ধ পানিতে উৎপত্তি হয়ে থাকে। তাই আপনার শিশুকে ডেঙ্গু জ্বর থেকে রক্ষা পেতে আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার উৎপত্তি এবং বংশবৃদ্ধি ধ্বংস করতে হবে।
বাড়ির আশেপাশে এডিস মশা বংশবিস্তারের উপযোগী পানি জমে আছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং সাথে সাথে পরিষ্কার করতে হবে।যেমন ফুলের টপ,বালতি,পুরানো টায়ার এবং নারিকেলের খোসায় পানি জমে থাকলে ৩ এর মধ্যে ফেলে দিতে হবে।বাড়ির আশেপাশে পানি বা ময়লা জামে থাকলে সাথে সাথে পরিষ্কার করতে হবে।
মশা নিরোধক ব্যবহার করুনঃ
শিশুদের শরীরের উন্মুক্ত স্থানে ডেঙ্গু মশা প্রতিরোধক করতে স্প্রে বা ক্রিম ব্যবহার করুন। তবে স্প্রে এবং ক্রিম ব্যবহারের বয়স হয়েছে কিনা সে বিষয়ে যাচাই করুন নয়লে শিশুর ত্বকে ক্ষতি হতে পারে।প্রতিরোধক ক্রিম,স্প্র এবং কয়েল এর প্যাকেটে মেয়াদ দেখে নিন।
মশারিঃ
শিশুকে ডেঙ্গু জ্বর থেকে রক্ষা পাবার জন্য ঘুমানোর সময় বিছানায় মশারি ব্যবহার করুন।
সুরক্ষার জন্য পোশাকঃ
শিশু বাহিরে খেলতে বা ছোটাছুটি করার সময় গা ডাকা পোষাক পরান। যেমন ফুল হাতা শার্ট, ফুল প্যান্ট,লম্বা ঝুলের ফ্রক এবং মুজা ও ভুট জুতা ব্যবহার করুন।
ডেঙ্গু সচেতনতাঃ
শিশুদের ডেঙ্গু থেকে প্রতিরোধ করতে বাড়ির আশেপাশে বা আত্মীয় স্বজনকে সচেতন করে তুলুন। তাদের বাড়ির পাশে পানি বা ময়লা আবর্জনা জমে থাকলে যথা সময়ে পরিষ্কার করার পরিছন্নতা সম্পর্কে উদ্ভুত করুন।
উপসংহার
ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করার জন্য বাড়ির বা রাস্তার যেকোনো জায়গা ময়লা আবর্জনা না ফেলা।ডেঙ্গু জ্বর থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সে বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি।আপনি যদি ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করতে চান তাহলে সকল বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে। এডিস মশা কামনার ফলে শিশুদের শরীরে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে
আমাদের পোস্ট টি মনেযোগ সহকার পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্যাক ধন্যবাদ। আপনি যদি প্রতিদিন এই ধরনের পরামর্শ পেতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট পেজটি ফলো করে যাবেন।কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের চিকিৎসা পরামর্শ এবং স্বাস্থ্য মূলক আর্টিকেল নিয়ে আলোচনা করে থাকি।
লুকাস৩৬৫ জুরে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url